
করোনা ভাইরাসের এ কঠিন সময়ে দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি রাজণৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সাধ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাড়াতে চেষ্টা করেছে। এ সময়টা মানুষের পাশে দাড়াতে গিয়ে বিএনপি সহজেই মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার একটা সুযোগ পেয়েছে। এ সময়ে বিএনপি চাইলে অসহায়দের পাশে দাড়িয়ে সরকারের কঠোর সমালোচনার মাধ্যমে করোনা পরবর্তী সময়ে রাজনীতির এক শক্ত ভিত তৈরি করতে পারতো। যা বিএনপির জন্য দারুন একটা সুযোগ বলে মনে করে রাজণৈতিক বিশ্লেষক মহল।
কতটুকু সফল তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করেন বিশ্লেষক এ মহল। এদিকে বিশ্লেষক মহলের সন্দেহকে উড়িয়ে দিয়েছেন বিএনপির নেতৃবৃন্দরা। তারা বলেন, করোনার এ কঠিন সময়ে সরকারী দলের চেয়ে ঢের বেশী সফলভাবে জনগনের পাশে দাড়াতে সক্ষম হয়েছে বিএনপি। কেননা সরকারী দলের নেতাকর্মীরা ফটোশেসনেই ব্যস্ত ছিলেন বেশী এমনটাই দাবী বিএনপি নেতৃবৃন্দের। বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতৃবৃন্দ তাদের সফলতা নিয়ে কথা বলেছেন প্রাইম নারায়ণগঞ্জের সাথে। এ বিষয়ে কথা হয় বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এডঃ তৈমুর আলম খন্দকারের সাথে।
তিনি প্রাইম নারায়ণগঞ্জকে বলেন, এটা ম্যান টু ম্যান নির্ভর করে। তবে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে। আমরা বিরোধী দল, ক্ষমতায়ও নেই অনেক বছর ধরে। তারপরও আমি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে প্রায় ৫০ হাজার মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছি বিভিন্ন থানা, উপজেলায়। এসএমএস এর মাধ্যমে যারা সাহায্য চেয়েছেন সবার পাশে দাড়িয়েছে।
করোনার এ সময়ে বিএনপি কি শক্ত ভিত তৈরি করতে পেরেছেন কিনা বা করোনা পরবর্তী সময়ে বর্তমানের অর্জন নিয়ে জনগনের সামনে দাড়াতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারই কি করছে? আর সরকারই জনগনের সামনে দাড়াতে পারবে কিনা? এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে দৌড়াতে দৌড়াতেই মানুষ মারা যাচ্ছে। রাস্তায়ই মানুষের জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে, সরকারই বা কি করতে পেরেছে জনগনের জন্য।
মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এডঃ সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, দেশে করোনা মহামারী দেখা দেয়ার পর থেকেই নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন জনগনের পাশে আছে। আমরা মানুষকে সাহায্য-সহযোগীতা করেছি। যেহেতু আমরা দীর্ঘসময় ধরে ক্ষমতার বাইরে তাই ব্যক্তিগত যতটুকু সামর্থ্য ছিলো তার সবটুকু নিয়ে আমরা জনগনের পাশে আছি এবং যতদিন এ মহামারী থাকবে ততদিন আমরা জনগনের পাশেই থাকবো ইনশা’আল্লাহ। তিনি বলেন, করোনা মহামারীতে বিএনপি পুরোপুরি সফল, তবে সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। কেননা তারা করোনা মোকাবেলায় যতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার প্রায় সবগুলোই ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। সঠিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে আরো অনেক করোনা রোগী শনাক্ত হতো।
একই বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে যার যার অবস্থান থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা জনগনের পাশে দাড়িয়েছে। খাদ্য সামগ্রী, স্বাস্থ্য উপকরণ এবং কৃষকদের সহায়তা সহ করোনার এ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা সকল ক্ষেত্রেই জনগনের পাশে ছিলো। তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের কাছ থেকে আমাদের কাছে নির্দেশ ছিলো দেশের এ দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাড়ানোর বিষয়ে। আমরা নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা সাধ্যমতো জনগনের পাশে দাড়িয়েছে এবং জনগন বিএনপির এ অবদানের কথা সবসময় মনে রাখবে বলে জানান তিনি।
জেলা যুবদলের সভাপতি মোঃ শহীদুল ইসলাম টিটু এ বিষয়ে বলেন, করোনা মোকাবেলায় বিএনপির শুরু থেকেই জনগনের পাশে ছিলো, আছে এবং থাকবে। আমরা জেলা যুবদলের পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছি, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছি। আমরা যতটুকু সফল আওয়ামীলীগও ততটুকু সফল না। কেননা দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকার পর বিএনপি যা করছে আওয়ামীলীগও তা পারে নাই। বিশেষ করে মহানগর যুবদলের সভাপতি খোরশেদ ৬১ টি লাশ দাফন সহ সর্বস্তরের মানুষের পাশে দাড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে এবং বিভিন্ন হামলা-মামলা সত্ত্বেও বিএনপি যে পরিমাণে সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছে তাতে সত্যিই আমি নিজেই অভিভুত। সব মিলিয়ে বলা যায় আমরা শতভাগ সফল।
মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবকদল সভাপতি আবুল কাউছার আশা বলেন, আসলে এখানে সফল বা বিফল বলে কোনো কথা নেই। এটা একটা মানবিক বিপর্যয়। দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় না থাকার পরও বিএনপির নেতাকর্মীরা সাধ্যমতো জনগনের পাশে দাড়িয়েছে। তাছাড়া আমাদের নীতিগত একটা সিদ্ধান্ত ছিলো করোনা মহামারী নিয়ে কোনো রাজনীতি নয়। আমরা সকলেই সকলের পাশে দাড়াবো এ মন মানসিকতা থেকে আমরা অসহায়দের পাশে দাড়াতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজেদের সেরাটা উজার করে দিয়েছি।
No posts found.